ঢাকা এয়ারপোর্টে আমি পৌছাতে ভোর ৫টা বেজে গেছে। শেষ রাতের ঢাকা এয়ারপোর্টে এমিরাট ফ্লাইট মনে হয় শুধু ল্যান্ড করেছে। ব্যাস্ত সবাই। অনেক্ষন অপেক্ষা করে হাজারো ঝক্কি ঝামেলা শেষ করে ইমিগ্রেশন বিভাগের স্যারদের ফেদানী খেয়ে খেয়ে আমার দেশে আসার স্বাদ মোটামুটি ম্লান। আমি দেশ থেকে ২০ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে চলে গিয়েছিলাম। নয়তো আমিও হয়তোবা তাদের মতই একটা চাকরি করতাম আর বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের চাকর বাকর মনে করে বন্যপ্রাণীর মত আচরন করতাম। লাগেজের ট্রলিটার হ্যান্ডেলে হাত রেখে একটু এদিক সেদিক দেখছি।
আমার এক মামাতো বোন মামার বাসায় গেলেই অপমান করতো। আমরা তাদের চেয়ে গরীব ছিলাম। অভিজাত এলাকায় তাদের এপার্টমেন্ট। বাবার বড় ব্যাবসা, গাড়ি আছে। আমি নাকি তাদের গাড়িতে চড়তে তাদের বাড়ি যাই। একদিন লজা পেয়ে রাত ১২টায় ওদের বাড়ি থেকে বাহির হয়ে যাই। সেদিন মনে মনে চিন্তা করেছিলাম যদি কোন দিন এই অভিজাত এলাকায় একটা এপার্টমেন্ট কিনতে পারি সেদিন ওদের সামনে গিয়ে দাড়াবো কিন্তু আজ আর সেই জ্বেদ আমার মনে আসছে না। এই মহুর্তে ভাবছি সবাইকে সার্ফ্রাইজ দিতে গিয়ে আমি নিজেই এখন সার্ফ্রাইজে পরে গেলাম।
আমার ছোট খালা নিলু। বয়স ৩০। দুই বছরের এক সিনিয়র ভাইকে বিয়ে করে। পেশায় খালু কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আর খালা ডাক্তার। খালুর উচ্চ শিক্ষা আর ভাল লাইফস্টাইলের জন্য বিদেশ চলে গেলে খালাও সাথে যায়। খালা এখনো সেখানে লেখা পড়া করছে। কিছুদিন আগেই কোয়ালিফাই হয়েছে কানাডার ডাক্তার হিসাবে। আমরা দুইজন বিদেশে থাকার কারনে বেশি বেশি ফোনে কথা বলি। আমাদের মাঝে খুব ভাব।
খালা অনেক আগে থেকেই আমাকে বলে আসছে সবাইকে সার্ফ্রাইজ দিতে কাউকে কিছু না বলে একা একা ঢাকায় এসে হোটেলে উঠবে এবং কয়েকজনকে ডেকে আনবে হোটেলে।। খালার এমন প্লান শুনে আমার খুব ভাল লেগেছে। আমাকে বহু অনুরুধ করেছে যেন আমিও আসি।আমি আবার খালাকে সার্ফ্রাইজ দিতে অন্য প্লান করি। খালার হোটেল রোম নাম্বার সব আমি জানি কিন্তু এই ভোর সকালে বাহির হতে আমার ভীষন ভয় করছে। এমনিতেই আমার মনে হচ্ছে অনেকগুলি বাঘ আমার চার দিকে হা করে থাকিয়ে আছে। চোখ অন্য দিকে ঘোরাকেই খেয়ে ফেলবে।
এক কাস্টম অফিসারকে দেখে খুব ভাল লাগায় জিজ্ঞেস করলাম কি করে যেতে পারি ওয়েষ্টিন হোটেলে। একটা কাউন্টার দেখিয়ে তিনি বললেন হোটেলের নিজের গাড়ি পাবেন। চলে যান। নিরাপদ। তিনি নিজে গিয়ে ওদের বলে দিলেন।
সকাল ৮টা বেজে গেল। রিসেপশনিস্টকে রোম নাম্বার বলতে মেয়েটি মুচকি হাসি দিয়ে বলে ম্যাম নয়টায় কল রিকুয়েষ্ট করেছে স্যার। আপনি আর্লি চলে আসছেন। এখন কল্ করা যাবেনা। অপেক্ষা করুন।
ওদের কাছে আমার লাগেজ রেখে একটু বাহির হলাম। সিগারেট ধরিয়ে ঘোরাঘুরি করে ফিরে এসে দেখি আরো অনেক সময়। আমি লিপ্ট ধরে উপরে চলে যাই। তিন তালায় উঠেই রোম পেয়ে যাই। অনেক্ষন ইতস্ততভাবে দাড়িয়ে থাকি। নিজের অজান্তেই রোমে টুকা দিতেই দরজা খুলে খালা যেন অজ্ঞান। তুই এখানে বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরে। এমন ভাবে জাপ্টে ধরে যেন আমার দম বন্ধ হয়ে যাবে।
খালা বিশ্বাস করতেই পারছেনা যে আমি চলে আসছি। খুশি আর এক্সাইটমেন্ট হয়ে যেন ঘুম ঘুম চেহারায় নির্বোধ মনে হচ্ছে। কথার খেই হারিয়ে যাচ্ছে।
খালা নিজেই রিসেপশনিস্ট এর কাছে ফোন করে আমার লাগেজ পাঠিয়ে দিতে বলে এবং আমাকে বলে তুই গোছল করে ফ্রেস হয়ে যা। অল্প কিছু পরেই নিচে যেতে হবে।।।।
খালার বন্ধু বান্ধব অনেকেই এসেছে হোটেলে ব্রেকফাষ্ট করে আড্ডা মেরে সবাই আবার দেখা হবে বলে চলে যায়।
খালা ব্লো জিন্স চোস ও টাইটফিট সাথে ক্রিম কালারের সেন্ডেল ও আকাশীব্লো একটা শার্ট গায়ে দিয়ে গলায় ঝুলিয়ে রাখছে একটি ব্রাউন কালারের কাপড়। এই কাপড়ের কি নাম দিব জানিনা। চুল গুলি ড্রাই করা হালকা ব্রাউনিস কালার করা বোঝা যায়। ৫ ফিট ৬ ইঞ্চির মেদ ক্লেদহীন স্বাস্থ সচেতন ডাক্তার মহিলা।।। ৩১ বছর বয়স কিন্তু বাচ্চা নেয়নি। এখনো নাকি সময় হয়নি।।।
আপনাদের একটা ধারনা দেই। করোনা টেষ্ট কেলেংকারী ডাক্তার সাবরিনার কথা মনে আছে। খালা দেখতে ৯০% সাবরিনার মত।।
আমি যখন সারাদিন খালার সাথে ওয়াটস আপে ভিডিও কলে কথা বলতাম তখন চেয়ে খালার ঠুট গুলি দেখতাম। লাল টকটক রিসালো ঠুট খালার। মনে মনে ভাবতাম সব সময় লিপিষ্টিক দিয়ে রাখে কিন্তু আজ সকালে দেখে মনে হচ্ছে না বাস্তবেই এমন সুন্দর। নাস্তা করতে যখন যাই তখন দেখলাম খালা শুধু একটা লিপ গ্লোস লাগিয়েই চলে গেল। মনে হয়ে সাইনি লিপিষ্টিক দিয়েছে।
রোমে ফেরত এসে খালা বলে ১২টায় রোম ছেড়ে দিতে হবে। দুই যেহেতু আমাকে সার্ফ্রাইজ দিয়েছিস এখন অন্য সবার জন্য কিছু করি। আমার নানা নানী খালা মামী সবাই আজ আমার ফ্লাটে থাকবে কারন আমার একমাত্র অনির ২২তম জন্মদিন। সেটা হবে বিকালে। আমরা এই সময় লাগেজ নিয়ে কি করবো ভাবছি। খালা নিচে গিয়ে রিসিপশনের মেয়েটার সাথে কথা বলে লাগেজগুলি রেখে দিল। আমাদের সময় পাস করা এক কঠিন ব্যাপার হয়ে দাড়ালো। বসন্দুরা সিটিতে গিয়ে লাঞ্চ করে এদিক সেদিক ঘুরে অস্থীর লাগছে। মা সহ সবাইকে কোন সময় দেখবো সেটাই আমার চিন্তা।
খালা হঠাৎ বলে সময় কিল করার রাস্তা পেয়েছি। চল সিনেমা দেখি। যেই কথা সেই কাজ। একটা ইংলিশ সিনেমার টিকেট নিয়ে আমরা ডুকে গেলাম। এসির বাতাসে আমি ঠিকিতে পারিনাই। ঘুমিয়ে গেলাম জটপট। খালার বাম কাধে মাথা রেখে আয়েশ করে ঘুমিয়েছি। যখন ঘুম ভাংলো তখন দেখি খালা আমার পেছন থেকে বাম হাতটা আমার বাম কাধে রেখে আছে আর আমার খালার দুধের অল্প উপরেই আমার মুখ। স্তম্ভিত ফিরে পেয়ে লজ্জা পেয়ে যাই। চুপচাপ এভাবেই থেকে যাই। মনে হচ্ছে খালাও তন্দ্রায় আছে কারন খালার গাল আমার মাথায়।
কেমন জানি একটা সেক্সুয়াল চিন্তা আমার মনে ডুকে গেল। আমার শরীরে সঞ্চারিত হচ্ছে কিছু একটা। তাই আর দেরি না করে আমার মাথা তুলে নেই আর সাথে সাথেই বলি সরি আমি খুব ক্লান্তিতে ছিলাম তাই কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝে উঠতে পারিনাই। ঘড়িতে ৭টা বাজে। তাই আমরা চলে যেতে উঠে দাড়াই। সিনেমা শেষ হতে আরো দেরি আছে। যখন বাহির হচ্ছিলাম তখন পেছন থেকে একটা ছেলে খুব খারাপ কমেন্ট করে বসলো। কথাটা ছিল এমন, গরম হয়ে গেছে তাই বাসায় চলে যাচ্ছে।।
খালা মুখ ফিরিয়ে ছেলেটিকে বলে, চল তুইও যাবি নাকি?
আমরা হোটেলে রওয়ানা দেই। রাস্তায় খালা বলে, আমাদের দেশের এই অভ্যাসটা আর যাবে না। কার সাথে কি সম্পর্ক সেটা না জেনেই খারাপ কমেন্ট করে বসে।
আমি হালকা করতে গিয়ে বলি, খালা ভাগিনা কি সিনেমা দেখতে আসে? ওরা সবাই প্রেমিক প্রেমিকা।
খালা সম্মতি জানিয়ে বলে, হ্যা তা ঠিক, তাই বলে কমেন্ট করতে হবে কেন? আর তুই এমন ভাবে ঘুমাচ্ছিলে?
সরি খালা, খুব টায়ার্ড তাই।
যাক আর সরি বলতে হবেনা।
হোটেল থেকে লাগেজ নিয়ে হোটেলের টেক্সি করে বাসায় চলে যাই ঠিক ৯টায়। আম্মুর সাথে ওয়াটস আপে কথা হচ্ছে। জেনে নিলাম সবাই এসে গেছে। দাড়োয়ান আমাকে ডুকতে দিচ্ছেনা। আমি ওয়াটস আপে আম্মুকে বলি আম্মু দাড়োয়ানকে আমার বন্ধুকে ডুকতে দিতে আমি অনির জন্য একটা গিপ্ট পাঠিয়েছি। আম্মু ইন্টারকমে দাড়োয়ানকে বলতেই সে গেইট খুলে দেয়।।।
দরজায় নক করতেই অনি দরজা খুলে আম্মু বলেই কাপতে থাকে। সবাই এসে আমাদের দেখে অবাক। কানাডা আর অষ্ট্রেলিয়া কি করে এক সাথে দরজায় হাজির।।।
সেই রাত আমাদের বাসায় অনেক আনন্দ হয়েছে।।এমন আনন্দ জীবনে উপভোগ না করলে বিশ্লেষণ করা কঠিন।
রাত একটায় সবাই চলে গেল। খালাও নানা নানীর সাথে চলে গেলেন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি নাস্তা করে আম্মু আর অনির সাথে কথা বলছিলাম তখন খালা ওয়াটস আপ করে।
এই দিপু কি করিস? নাস্তা করেছিস। সবাইকে নিয়ে দুপুরে বাসায় চলে আয়। এক সাথে লাঞ্চ করবো। আই মিস ইউ।
আই মিস ইউ আম্মু। দাঁড়াও আমি আম্মুকে দেই। তুমি বল।
আম্মু রাজী হয়ে যায়। আমরা রেডি হয়ে নানীর বাড়ি চলে যাই। অনির কাজ আছে বাহিরে তাই বিকালে যাবে।
লাঞ্চ করে আমরা যে যার কথা বলছি। আম্মু নানা নানী বার বার খালুর কথা বলছে তাই খালা একটু রেগে গিয়ে বলে,
তোমাদের জামাই নিরামিষ। কাজ আর লেখাপড়া নিয়েই ব্যাস্ত। নিউ ইয়র্কের প্রজেক্ট শেষ হলে এসে আমাকে নিয়ে যাবে। এই কয়দিন আমি দেশে ইঞ্জয় করি। দিপু আছে আমার কোন অসুবিধা হবে না।
আমি আর খালাকে রেখে উনারা রুমে চলে যায়।
খালা আমার দিকে চেয়ে হাসি দিয়ে বলে, কিরে দিপু, এই কয়দিন আমাকে সময় দিতে পারবি না?
আমার আলাদা কোন সময় নেই। সব তোমার জন্য রেখে দিলাম। যত খুশি নিও।
আপু বললো তোরে বিয়ে দিতে চায়। বিয়ে হয়ে গেলেতো বউকে দিতে হবে সময়। আমাকে কখন দিবে।
আমি বিয়ে এখন অবশ্যই করবোনা। তোমার চিন্তা নাই। রাত দিন ২৪ ঘন্টা আমি তোমার।
এমন ভাবে কোন সুন্দর মেয়েকে দেখা হলে বলে দিস তাহলে আমাদের আর কষ্ট করে মেয়ে দেখতে হবে না। মেয়ে নিজেই আমাদের খোজবে।
আমি খালুর কথা বলতেই আবার রাগ করে বলে,
তুইও আমার সময় নষ্ট করছিস। আবির খুব ভাল মানুষ কিন্তু আমার টাইপের না। রোমান্টিকতা নাই। কোন দিন জীবনে সিনেমায় নিয়ে যায়নাই। গতকাল বারবার তাই মনে হচ্ছিল।
ঠিক আছে খালা, আমি আর বলবোনা। প্রতিদিন সিনেমায় নিয়ে যাব আমি।
কেন? তুই ঘুমাইতে যাবি নাকি? সাথে বালিশ নিয়ে যেতে হবে।
না খালা বালিশ নিতে হবে না। তুমিই তো আছ।
খালা কেমন যেন একটু অন্য ইংগিত করে বলে, জ্বী না। এই বালিশের মালিক আর একজন।।।
আমিও হাসি হাসি করে বলি, আমিতো আর মালিকানা দাবি করছিনা। মালিক নেই তাই একটু ঘুমাবো।
যা তোর সাথে আমি সিনেমায় যাব না। দিপু শুন। দুইদিন পর জেনিয়ার বিয়ে। আমরা সবাই যাব। অনেক মজা হবে। খালা কপি করতে কিচেনে যায়।
জেনিয়া আমার এক মামার মেয়ে। আমিও সাথে সাথে যাই। খালা আমাকে বলে তুই বস আমি কপি নিয়ে আসি।
আমি খালাকে বলি, না খালা এতদিন পর আমি তোমার দেখা পাইলাম তাই সাথে সাথে থাকতে চাই। তুমি বানাও আমি দেখি।
কেন আমরাতো প্রতিদিন ভিডিও কলে কথা বলতাম।
তা বলতাম কিন্তু কাছেতো আর পেতামনা।
খালা আদর মাখা কন্ঠে বলে আমাদের কি নিয়তি। এক এক জন এক এক দেশে। মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগে। চল এখানেই থেকে যাই। এই কথা বলেই আমার গালে হাত দিয়ে বলে, অনেক মিস করি।
আমি খালার কাধে হাত রেখে বলি, দেখা যাবে। আমরা অন্তত তিন মাস এখানে আছি। আগে সেটা ইঞ্জয় করি তারপর দেখা যাবে।
তারপর আবার সেই বোরিং মেশিনের কাছে আমি চলে যাব। একটা ফান্সা জীবন আমার। মেপে মেপে কথা বলে, সব কিছু তার মেপে মেপে করতে হবে। আমি বিরক্ত।
খালা তুমি কি হ্যাপি না।
নো নো। আমি হ্যাপি না সেটা বলা যাবে না। টাকা পয়সা নামদাম, ভদ্রতা সম্মান সব আছে। ও শুধু কেমন জানি। নিরামিষ টাইপ। নো স্পাইস। চঞ্চলতা নাই। ইউ নো আই মিন এক্সট্রা ফ্লেভার। দেট চেন্স ইউ কেন চে। আমি হ্যাপি না।।
তাইতো খালা আমি বিয়ে করতে ভয় পাই। মেয়েরা যে কি চায় সেটাই জানিনা।
জেনে যাবি সব। মেয়েরা ছোট ছোট ভালবাসা চায়। ছোট ছোট কেয়ার। ইয়ার্কি দুষ্টুমি প্লেয়েভল টাচ। এমনিতেই মেয়েরা মেল্ট হয়ে যায়। ভালবাসায় গদগদ করে। কোটি কোটি টাকা দিয়েও তা পাওয়া যায়না।
আচ্ছা ঠিক আছে খালা, আমি তোমাকে কেয়ার করবো এই কয় মাস। কাধে একটু চাপ দেই।
গাধা তুই আমাকে কি বউয়ের মত করতে পারবি? তোর খালুর কাজ সেটা। আচ্ছা কেয়ার করিস বাট নো টাচ।।।
সরি খালা, লাইক দিস টাচ ফর মাদার। হার্মলেস। মাদার্লী। ফেয়ার এন্ড কেয়ার টাচ।।।।
ওহ ফেয়ার এন্ড কেয়ার। নাইচ ওয়ার্ড। নে কপি রেডি। ফেয়ার এন্ড শেয়ার যেন না হয়।
ফেয়ার এন্ড কেয়ার না খালা মনে হয় কথাটা হবে শেয়ার এন্ড কেয়ার। যা হয় প্রেমিক প্রেমিকার মাঝে।।।
সেখানে কি তাহলে শেয়ার এন্ড কেয়ারের কেউ আছে নাকি?
থাকবে কি করে। অবসর সময়তো তোমার সাথেই শেয়ার করি ভিডিও কলে।
আমার সাথে সময় ব্যয় না করে কাউকে কেয়ার করলেই পারিস।।
আমার তা দরকার নাই। টাকা দরকার ছিল। তা করেছি। এখন শেয়ার কেয়ার সব হবে ধীরে ধীরে।
আমার হ্যান্ডসাম ভাগিনা সুখি হবে জানি। ভাল দেখে সুন্দর একটা মেয়ে দেখে বিয়ে দিব।।
তোমার মত সুন্দরী শিক্ষীত যেন হয়। নয়তো চলবেনা।
আমার মত হতে হবে কেন? আর সেটা কোথায় পাব। আমার মতই কোথায় পাব।।
আমি যে কল্পনায় তোমার মত একজনকে জায়গা করে দিয়েছি। ভদ্র নম্র অর্থাৎ সব কিছু তোমার মত। লম্বা চৌওড়া।
সব কিছু আমার মত। তাহলে কোথাও গিয়ে আমাকে দেখিয়ে অর্ডার করতে হবে তাই না?
আমি তোমার সাথে ছাড়া আর কোন মেয়েলোকের সাথে কথা বলিনি। তাই ধীরে ধীরে কল্পনায় তোমার কেউ জায়গা করে নিয়েছে।।
তুইতো দেখি আমি তোর খালা না হলে প্রপোজ করে দিতে।
তা আবার জিগায়। এত দিনে বিয়ে হয়ে যেত আমাদের।।
অসভ্য কি বলিস।। এই সব। তারাতারি কপি খেয়ে বাড়ি যা। তোর ফেয়ার এন্ড কেয়ার আমার কিছুই লাগবে না। আমি তোর কাছে নিরাপদ না।
কি যে বল খালা। ১০০ ভাগ নিরাপদ। আমি ছেলে খারাপ না।
সে দিন বিকালে আমরা বাসায় চলে আসি। রাত ১০টায় খালা ভিডিও কল করে। আমি একা বিছানায় শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছি। টাইমের পরিবর্তন তাই এডজাস্ট হচ্ছে না।
খালা ফোন করেই বলে, ঘুমিয়ে গেছিস নাকি?
না খালা। ঘুমাবো।
কাল বিকালে কিছু শপিং করতে হবে। তুই আর অনি যাবি আমার সাথে।
আমি ইয়ার্কি করে বলি, অনি কেন খালা। আমি আর তুমি গেলে হয়না।
না না হয় না। তোর সাথে আমি নিরাপদ না বলেই হেসে দেয়। শুধু তোর সাথে গেলে মানুষ মনে করবে আমরা স্বামী স্ত্রী।
এতে তোমার অসুবিধা কি। মানুষ আমাকে গালি দিয়ে বলবে, শালার বউ কি সুন্দর।। তোমার কি?
মানুষ তোর খালাকে বউ মনে করবে আর এতে তোর কিছুই যায় আসেনা। আমার আসে।
মানুষ মনে মনে অনেক কিছুই করে। অনি লাগবে না। আমিই তোমাকে কেয়ার করবো। তোমার যা লাগে আমি কিনে দিব। যা চাও তাই দেব।।।
আচ্ছা দিস। অনি সব কিছু জানে তাই কালকে লাগবে। পর থেকে শুধু তোরে নিয়ে যাব। ইউ এন্ড মি।। ঠিক আছে আমার নিউ লাভার। দেখিস আবার আমাকে নিয়ে বন্ধুবান্ধবদের বলিস মা যে আমি তোর গার্লফ্রেন্ড।
না না খালা তা বলবো না। তাহলে সবাই আমাকে হিংসা করবে।
তুই এত কথা বলতে পারিস কি করে।। এমন ভাবে বলিস যেন আমি দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দরী। আমি নিজেই পছন্দ করি না।। কি এমন আছে আমার।
অনেক কিছুই আছে যা অন্যদের মাঝে নাই। যা সব পুরুষ পছন্দ করে।
কই তোর খালুতো এমন কিছুই কখনো বলেনি। তোর কি পছন্দ মেয়েদের।
তোমার মত হলে সব কিছুই পছন্দের। তোমার চেহারা আর ঠুট আমি ভিডিও কলে বেশি দেখি তাই সেটাই অনেক ভাল লাগতো। অনেকদিন পর সরাসরি দেখে বুঝতে পারলাম তোমার মাঝে অনেক কিছুই আছে। লাকী ম্যান খালু।
লাকী না ছাই। গাধা একটা। সারাক্ষন বই নিয়ে পরে থাকে। আমকে ভাল করে দেখার সময় কই।
ঠিক আছে খালা। খালুর হয়ে আমি তোমাকে দেখছি। কম্পলিমেন্ট করছি।
আমার কম্পলিমেন্ট লাগবে না। তুই করলে আমার কি লাভ। যে করার সে করে না। আমার মনে হয় আমি পারফেক্ট না।
খালা তুমি একজন দেবী। আমার দেখা সেক্সি মেয়ে তুমি। সরি ফর দা লেজ্ঞুয়েজ।
ইটস ওকে। টেইক ইট এজ এ কম্পলিমেন্ট। আমার সাথে তোর রিলেশন এমন ভাবে ডাইরেক্ট কথা বলার না। কেউ যেন তা জানতে না পারে।
ইউ মিন কেউ জানতে না পারলে আমরা বলতে পারবো।
কি বলবি।
এই যে তুমি সেক্সি। গডেস। দেবী।
আমার এমন কিছুই নাই। তুই বাড়িয়ে বাড়িয়ে আমাকে বলছিস।
খালা তুমি লক্ষ লক্ষ ছবি পাশে নিয়ে বস। দেখবে তোমার চেয়ে সুন্দরী একটাও নাই।
আমি আমার সাইজ নিয়ে খুশি না।
বোম্বের নায়িকা পাডুকানও নিজেকে নিয়ে খুশি না। কিন্তু আমার মত হাজার হাজার মানুষ পাগল সেই মালের জন্য। মুর্তির মত দেহ। খাড়া খাড়া শরির কয়জনের আছে।।।
তোরে বিয়ে দিতে হবে।
তারাতারি দাও। তাহলে তুমি নিরাপদ হয়ে যাবে।
কেন বিয়ে দিতে দেরি হলে কি আমার বিপদ হবে নাকি?
না এমন কিছু হবে না। ফেয়ার এন্ড কেয়ারে থেকে আমি এখন শেয়ার এন্ড কেয়ার খোজতে হবে।। তোমার সাথে শেয়ার করার আইন নাই। থাকলে চেষ্টা করতাম।
আমি তোর মামতো খালাতো বোন হলে আমি নিজেই শেয়ার করে দিতাম এতক্ষনে। যেভাবে আমাকে টিজ করছিস। যে কারো মেয়ের পক্ষে সহ্য করা কঠিন। এইবার ঘুম যা। আর মাথা নষ্ট করে লাভ নাই।।
দুইদিন পর জেনিয়ার বিয়ে। বিয়ে হবে মানিকগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে। আমরা সবাইকে গিয়েছি। খুব ধুমদাম করে বিয়ে হয়েছে। অনেক আনন্দ ফুর্তি করলাম। খালা সবুজ কালারের শাড়িতে এমন সুন্দর লাগছে যা বলার মত না। বর কনে সবাই চলে গেছে। বাড়ির সামনে খালা একা দাঁড়িয়ে। আমি পাশে গিয়ে বলি, এই শাড়িতে তোমাকে খুব সেক্সি লাগছে খালা। রাতে বাড়িতে ডাকাত পর্তে পারে।
খালা চারদিকে চেয়ে আমাকে বলে, তুই ছাড়া এই ডাকাত আর কেউ না। আমাকে নিয়ে এমন কুচিন্তা কেউ করবে না।
তুমি দেখনি খালা। সারাদিন মানুষ তোমার সামনে আর পেছনে ভাদ্র মাসের কুকুরের মত হা করে করে দেখছে।
তুই ছাড়া এমন কুকুর আর কেউ নয়। আমার সামনে পিছে কি আছে যে দেখবে।
আর একটু কাছে গিয়ে বলি, তোমার পাছা আর বুক মানুষের মাথা খারাপ করছে।
খালা আমাকে মারতে তাড়া করে বলে অসভ্য। মুখে কিছুই ঠিকে না।
আমাকে মেরে লাভ নাই। কে কখন হাত দেয় ঠিক নাই।
খালা মুচকি হাসি দিয়ে বলে তুইও কি ওদের দলের একজন।
আমিত সাধারন মানুষ খালা। সাধু সন্যাসীর পর্যন্ত ধ্যান ভেংগে যাবে। শুধু খালা বলে আমার হাত ঠিকে আছে।।
হাত বেধে রাখ। নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার চেষ্টা করিস না। ভেতরে অনেক মেয়ে আছে গিয়ে পটিয়ে হাত দে।। বদমায়েশ। চল ভেতরে যাই।
এমন কর কেন? আমি হাত দিব না। একটু দেখি তোমাকে ভাল করে।।।
না না। দেখতে দিলে খাইতে মন চায়। পুরুষ মানুষ খালা আর বোন বুঝেনা।
উলটা বললে খালা। শুনছি মহিলারা শিবলিঙ্গের পুজারী। যা পায় তাই গদগদ করে খায়। আর তোমার মত খালা পাইলে ভাগিনারা লাইন দিবে।
জ্বি না। আমি এত সস্তা খালা না। আমি দেখে শুনে যাচাই করে খাই এই কথা বলেই খালা ভেতরে চলে যায়।
খালা এত ভয় পাও কেন। পালিয়ে যাচ্ছ কেন?
খালা ঘুরে হাসি মুখেই তাপ্পড়ের মত করে হাত দেখিয়ে বলে, আমি ভয় পাইনা।।।
অনেক মানুষ চলে গেলেও বাড়িতে অনেক মানুষ। নানা নানী আর আম্মু অনি ঢাকা চলে গেছে। অবশ্য এক গাড়িতে জায়গা হবে না। আমার গাড়ি এখনো আছে।
দূরের কাছের অনেক আত্বীয় সবাই বিদায় নিচ্ছে। আমি খালার পাশে গিয়ে দাড়াতেই একটা খোচা দিয়ে বলে যাবে না খালা?
আগামীকাল যাব।আর হয়তোবা আসা নাও হতে পারে। পদ্মাবতীকে একবার দেখে যাই। কি বলিস আজ আমরা থেকে যাই।৷
না খালা, আমার ভাল লাগছে না। চল চলে যাই।
না না। কি বলিস। পদ্মার পাড়ে গেলে অনেক ভাল লাগবে। পদ্মা যদিও এই এলাকার অভিশাপ কিন্তু আমাদের জন্য খুব রোমান্টিক ব্যাপার। কল কল শব্দ আর থৈ থৈ পানিতে মন ভরে যাবে। ওরা সবাই বলছে যাবে।
আমার মোটেই ভাল লাগছে না। প্রচুর মানুষ। থাকার জায়গা হবে না।।
খালা রেগে যায়। চুপ কর। আমি সবাইকে ডাকছি। চা খেয়ে সবাই যাব।।
আমরা প্রায় ১৫ জন ছেলে মেয়ে। সবাই আমার সম্পর্কে খালা, মামাতী খালাতো ভাই বোন। পদ্মার আগাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। আর সেই পদ্মার পাড়ে আমরা যাচ্ছি রোমান্টিক হতে। খুব সুন্দর দেখতে কিন্তু আশে পশের মানুষের বাড়ি ঘর ভেংগে নিয়ে যাচ্ছে আর অসহায়ের মত মানুষ চেয়ে আছে তা দেখে মন কষ্টে ভরে যায়।
নানা বাড়ি খুব জনপ্রিয় এই এলাকায়। সবাই চিনে জানে। খালার সাথে অনেক মানুষ কথা বলছে। একজন মুরব্বি সাথে কথা বলে একবার বিনামূল্যে চিকিৎসার আয়োজন করবে সে